শিরোনাম :

চাকরি: বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব কত বড় সংকট?

চাকরি: বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব কত বড় সংকট?
Admin

বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটা বড় অংশই এখন বেকার। পড়াশোনা শেষ করে বছরের পর বছর চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। সম্প্রতি একজন তরুণ 'ভাতের বিনিময়ে পড়ানোর বিজ্ঞাপন' দেয়ার পর করোনা মহামারিতে কর্মসংস্থান পরিস্থিতি কতটা সংকট তৈরি করতে পারে - তার একটা নিদর্শন হিসেবে সামনে এসেছে।

বেকারত্বের হতাশা আর সংকট যে এখন কতটা মারাত্মক - সেটি উঠে এল উচ্চশিক্ষিত এক তরুণীর অভিজ্ঞতায়। নাম পরিচয় গোপন রেখে এই ইংরেজিতে মাস্টার্স পাশ একজন তরুণী জানান, পড়াশোনা শেষ করতেই তার আটাশ বছর বয়স হয়ে যায়। সরকারি চাকরির বয়স ত্রিশ বছরের মধ্যে একটি বিসিএস এবং ২০টির মতো সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু মহামারির মধ্যে চাকরির পরীক্ষা বন্ধ থাকা আর বয়স শেষ হবার দুশ্চিন্তায় পেয়ে বসে তাকে।

পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এলে একই দিনে ৫টি চাকরির লিখিত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারিত হয়, দুটি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। এছাড়া দুএকটি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ আসে। সবমিলিয়ে বেকারত্বের এই হতাশা থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।

চাকরি প্রত্যাশী এই তরুণী বলেন, "বয়সের সীমাবদ্ধতার কারণে আমি আশা নিয়ে বাঁচতে পারছি না যে সামনে পড়াশোনা করবো, করে এটা হয়নি অন্যটা হবে এরকমও হচ্ছে না। একাধিক পরীক্ষা, তারওপরে দুর্নীতির কারণে প্রশ্ন আউট হচ্ছে।"

"বিভিন্ন কারণে আসলে আমি অনেকটা হতাশ হয়েই আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলাম। আসলে খুব বিষণ্ন। আমি এখন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ নিচ্ছি।"

এখনো একটা চাকরি জন্য অপেক্ষা করছেন এই তরুণী।

কেন অন্য পেশা, আত্মকর্মসংস্থানের চেষ্টা নয় প্রশ্নে তিনি বলেন, "এটার জন্য একটা মানসিক প্রস্তুতি লাগে। আর্থিক সমর্থন লাগে।"

"আমি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে গিয়েছিলাম। সেখানে মাত্র ষাট হাজার টাকা দেবে, কিন্তু সেই টাকা উত্তোলনের জন্য যে ধরনের কাগজপত্র বা ফর্মালিটিজ লাগে সেটাও আমাকে সাপোর্ট করছে না। যেমন জমির দলিল লাগবে, কিন্তু এখনো আমি সম্পত্তির মালিক হয়নি। আমার বিয়ে হয়নি। অন্য কিছু যে করবো আমার সেই সোর্সটাও বন্ধ হয়ে গেছে।"

ধারণা করা হয়, দেশে প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি জনশক্তি শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। যেখানে কর্মসংস্থানের মাত্র শতাংশ সরকারি খাতে আর ৯৫ শতাংশই বেসরাকারি উৎসে।

কিন্তু উচ্চশিক্ষা সামাপ্ত করে বেশিরভাগই এখন সরকারি চাকরির জন্য অপেক্ষা করেন বছরের পর বছর। একাধিক বিসিএস এবং সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়ে অনেকের মধ্যে হতাশা তৈরি হয় কারণ যে পরিমাণ চাকরি প্রত্যাশী তার তুলনায় চাকরির সুযোগ নেই।