শিরোনাম :

ঘরে পানি, একবেলা খেয়ে দিন পার করছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ

ঘরে পানি, একবেলা খেয়ে দিন পার করছেন তিস্তাপাড়ের মানুষ
Admin

লালমনিরহাটে ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরে পানি প্রবেশ করায় রান্নাও করতে পারছেন না তারা। কোনো রকমে একবেলা খেয়ে দিন পার করছেন এসব পানিবন্দি মানুষ।

রোববার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৬৭ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০)। অর্থাত পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ধরলা নদী শিমুলবাড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এর আগে শনিবার (১৮ জুন) রাত ১০টায় তিস্তার ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল জানান, পানিবন্দি প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। গতরাত থেকে তিস্তার পানি আবারো বৃদ্ধি পেয়ে ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ফকির পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন জানান, গত দুইদিন ধরে প্রায় একশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যায়নি।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা জাগো নিউজকে বলেন, উজানের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোববার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার তীরবর্তী পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে।

গত দুইদিন থেকে তিস্তার পানি ঘর বাড়িতে প্রবেশ করায় পরিবারগুলো রান্না করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই উঁচু স্থানে চুলা জ্বালিয়ে কোনোরকমে এক বেলা খেয়ে জীবন যাপন করছেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জাগো নিউজকে বলেন, বন্যা কবলিত জেলার পাঁচ উপজেলায় ১৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শনিবার তা বিতরণও শেষ হয়েছে। বন্যা কবলিত যেসব এলাকা আছে সেগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।