শিরোনাম :

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নোয়াখালীতে ৫ জনের মৃত্যু

বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, নোয়াখালীতে ৫ জনের মৃত্যু
Admin

প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে খাদ্য সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ সোমবার জেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটর ধসে যাওয়ায় এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নোয়াখালীতে গত কয়েকদিনের ভয়াবহ বন্যায় জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে ৮ উপজেলা আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৮৭ ইউনিয়ন ও ৭ পৌরসভার ১৯ লাখ ৮১ হাজার ৭০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলায় এক হাজার ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে এক লাখ ৮২ হাজার ৩০৯ জনকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

এ পর্যন্ত সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৮৮২ মেট্রিকটন চাল ও এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এখনো ৯১৮ মেট্রিকটন চাল মজুত রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় বন্যায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ৮৮টি মেডিকেল টিম বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের কমকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানন, আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানা গেছে, জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে ২০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। অন্যদিকে, বেড়েছে সাপের উপদ্রব। গত তিন দিনে নোয়াখালীতে ৬৩ জনকে সাপে কেটেছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সাপে কেটেছে ২৮ জনকে। বন্যার কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে ১০৮ জন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম জানান, মেডিকেল টিম ছাড়াও হাসপাতালে সার্বিক চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

নোয়াখালীতে এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বেগমগঞ্জ উপজেলা ও সোনাইমুড়ী উপজেলা। এই দুই উপজেলার ২৬ ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার সব কয়টি রাস্তায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা আরিফুর রহমান জানান, ফেনীর মুহুরী নদীর উজানের পানি প্রবেশ করায় জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী উপজেলার আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলায় গত দুদিন বৃষ্টি না হলেও উজানের পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি ও সড়ক তলিয়ে গেছে। স্কুলে ঢুকে পড়েছে পানি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট।

কবিরহাটের বাসিন্দা মোহাম্মদ সালাম জানান, বন্যা ও ভারী বর্ষণের কারণে কবিরহাটের সব রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে বন্ধ রয়েছে। এদিকে দিন মজুর খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজ করতে না পেরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। কর্মহীন মানুষ সাহায্যে এগিয়ে আসতে সরকার ও বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে বন্যা পরিস্থিতি আমি সরেজমিন পরিদর্শনে আছি। আমরা চেষ্টা করছি দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং টিমকে রেগুলেটর এলাকায় নিয়োজিত করা হচ্ছে।