নতুন এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশে ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৪টি জেলারই বায়ুর মান আদর্শ মাত্রার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আদর্শ মাত্রার মধ্যে আছে মাত্র ১০টি জেলার বায়ুর মান।
এই অতিরিক্ত বায়ু দূষণের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়ছে মানুষের প্রজনন ক্ষমতাসহ সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর।
বেসরকারি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর জরীপে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ক্যাপসের গবেষণায় অতিরিক্ত দূষিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাংলাদেশের ১৮টি জেলাকে।
সর্বোচ্চ বায়ুদূষণ পরিমাপ করা হয়েছে গাজীপুরে, এরপরেই রয়েছে ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ, যেখানে বায়ুতে অতি ক্ষুদ্রকণার মাত্রা বাংলাদেশের আদর্শ মান প্রতি ঘনমিটারে ৬৫ মাইক্রোগ্রামের চাইতে চার থেকে পাঁচগুণ বেশি।
আর বায়ু দূষণের জন্য দায়ী যে অতি ক্ষুদ্র কণা সেটি আদর্শ মাত্রায় আছে কেবল ১০টি জেলায়। সর্বনিম্ন বায়ুদূষণ পরিমাপ করা হয়েছে মাদারীপুর, পটুয়াখালী ও মেহেরপুরে।
এই অতি ক্ষুদ্রকণা বলতে ২.৫ মাইক্রন বা তার কম আকারের বস্তুকণার কথা বলা হচ্ছে।
ক্যাপসের ৮১ সদস্যের একটি গবেষক দল দেশটির ৬৪ জেলার তিন হাজারের বেশি স্থানের বায়ুর অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার মান পরীক্ষা করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন।
তারা এসব জেলার প্রতিটিতে ২.৫ মাইক্রন বা তার কম আকারের ধূলিকণার ব্যাপকতা পরিমাপ করেছেন।
একটি চুলের সাথে তুলনা করলে এসব ধূলিকণার আকার চুলের প্রায় ২০ ভাগের এক ভাগের সমান। যা সহজেই মানবদেহে প্রবেশ করে নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে।
এসব জেলায় বায়ুদূষণ বেশি ও কম হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষক দল তাদের পর্যবেক্ষণে দেখেছে যে, সবচেয়ে দূষিত ওই তিনটি শহরে অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ কাজ ও সমন্বয়হীন সংস্কার কাজ ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
আশেপাশের প্রায় ১২০০ ইটভাটা, ছোট-বড় কয়েক হাজার শিল্প কারখানা, ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কালো ধোঁয়া এবং ময়লা-আবর্জনা পোড়ানো সেখানকার দূষণের অন্যতম কারণ বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।
আবার যেসব অঞ্চলে বায়ু দূষণ কম সেখানে তারা এর কারণ হিসেবে রাস্তাঘাটে জ্বালানি তেলে চালিত যানবাহনের সংখ্যা, ইটের ভাটা কম থাকাকে চিহ্নিত করেছেন গবেষকরা।
সেই সাথে ওইসব অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ গাছপালা এবং প্রাকৃতিক জলাধার লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন।
এইসব এলাকায় রাস্তা সংস্কার কাজের পরিমাণ খুব একটা চোখে পড়েনি বলে উল্লেখ করেন গবেষক দলের প্রধান আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
তিনি বলেন, "যেসব অঞ্চলে বায়ু দূষণের মাত্রা কম দেখা গিয়েছে সেখানে দেখা গিয়েছে বড় ধরণের কোন প্রকল্পের কাজ বা শহরের প্রাণকেন্দ্রে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বা সংস্কারের কাজ হচ্ছে না। হলেও সংখ্যায় খুব কম।"
গবেষণায়, সবচেয়ে বেশী বায়ু