পৌনে তিন বছর পর এমপিওভুক্ত হচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ২ হাজার ৬১৬ বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বুধবার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘এ বছর নতুন করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের ২ হাজার ৬১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হচ্ছে। আজ দুপুরে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে।’
চলতি বছরের মে মাসে বেসরকারি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। পরে তা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এই কমিটিকে সহায়তা করতে আরও চার সদস্যের একটি উপকমিটি গঠন করা হয়।
এ কমিটিকে সহায়তা করে ব্যানবেইসের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট আবু তাহের খানের নেতৃত্বে চার সদস্যের কমিটি।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়।
২০১৯ সালে ২ হাজার ৬২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়। এরপর বুধবার নতুন এমপিওভুক্তির ঘোষণা এলো।
গত অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেট বরাদ্দের যে প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে, তাতে নতুন প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ২০০ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৫০ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চূড়ান্ত বাছাইয়ে ২ হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ছাড়পত্র পায়। এরপর আবার ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়।
দেশে এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। আর এমপিওভুক্ত হয়নি এখনও প্রায় ৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য গত বছরের ২৯ মে সংশোধিত এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে এমপিওভুক্তির জন্য তিনটি শর্ত দেয়া হয়।
শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার, এই তিন বিষয়ে ১০০ নম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০, পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০ এবং পাসের হারে ৪০ নম্বর রাখা হয়েছে। আগের নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির মেয়াদের ওপর ২৫ নম্বর ছিল, যা সংশোধিত নীতিমালায় বাদ দেয়া হয়েছে।
২০২১ সালের নীতিমালায় কোন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম কতজন শিক্ষার্থী থাকতে হবে, তা বেঁধে দেয়া হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, নিম্ন মাধ্যমিকে শহরে ১২০ ও মফস্বলে ৯০, মাধ্যমিকে শহরে ২০০ ও মফস্বলে ১৫০, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহরে ৪২০ ও মফস্বলে ৩২০, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে শহরে ২৫০ ও মফস্বলে ২২০ এবং ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে শহরে ৪৯০ ও মফস্বলে ৪২৫ শিক্ষার্থী থাকতে হবে। পাসের হার স্তরভেদে ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।