শিরোনাম :

প্রচন্ড তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপ

প্রচন্ড তাপদাহে পুড়ছে ইউরোপ
Admin

সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙছে। নতুন নতুন অগ্নিশিখার মুখোমুখি হচ্ছেন ফায়ার ফাইটাররা। সে অনলে পুড়ছে পশ্চিম ইউরোপের বেশির ভাগ অংশ।

মৃদু আবহাওয়ার দেশ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাজ্যের বাসিন্দারা প্রথমবারের মতো ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা দেখেছেন। বছরের উষ্ণতম দিন দেখেছে জার্মানি। অন্যদিকে তীব্র দাবদাহে মৃত্যু বেড়েছে পর্তুগালে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী দাবানল। এমন বাস্তবতায় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) সতর্ক করে বলেছে, সবচেয়ে খারাপটা এখনও আসেনি।

মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনে দাবদাহ আরও বেশি নিয়মিত, তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। এ বিষয়ে ডব্লিউএমওর প্রধান পেটেরি টালাস বলেন, ‘ভবিষ্যতে এ ধরনের দাবদাহ স্বাভাবিক হতে যাচ্ছে এবং আমরা আরও চরম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছি।’

চলমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন দপ্তর আগুন সংক্রান্ত বড় ধরনের ঘটনার কথা জানিয়েছে। পূর্ব লন্ডনের ওয়েনিংটনে আগুনে পুড়ে গেছে বাড়ি।

উদ্ধার হতে যাওয়া ‍বাসিন্দারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, আটটির মতো বাড়ি এবং সম্ভবত একটি গির্জা আগুনে অঙ্গার হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলে থাকা এক ফায়ার ফাইটার পরিস্থিতিকে ‘পুরোদস্তুর নারকীয়’ আখ্যা দিয়েছেন।

ফ্রান্সে স্থানীয় সময় সোমবার ৬৪টি এলাকায় উচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে। দেশটির মূল ভূখণ্ডে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড এখন পর্যন্ত না ভাঙলেও তিন দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় দাবানল দেখেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল।

মদ উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত গিয়দ অঞ্চলে গত ১২ জুলাই থেকে ১৯ হাজার ৩০০ হেক্টর এলাকা পুড়ে যায় আগুনে। ৩৪ হাজারের মতো মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে হয়েছে।

বেলজিয়ামের ডি হান এলাকার টিলায় আগুনে পুড়ে যায় বেশ কিছু যানবাহন, তবে ভয়াবহ তাপের পর দেশটিতে বজ্রপাতের আভাস পাওয়া গেছে। স্থানীয় সংবাদপত্র লা সয়ারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বজ্রপাতের পর কিছু এলাকায় ২০ থেকে ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হতে পারে।

মঙ্গলবার বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল জার্মানিতে। স্থানীয় সময় বেলা ৪টায় পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর দুইসবার্গে তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসে মঙ্গলবার অন্যতম সর্বোচ্চ ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।

চরমভাবাপন্ন তাপমাত্রার কারণে ইউরোপজুড়ে দাবানল স্বাভাবিক বিষয় হয়ে গেছে।

পতুর্গালে তাপমাত্রা ব্যাপক মাত্রায় কমেছে। যদিও গত সপ্তাহ থেকে দেশটিতে উত্তাপজনিত মৃত্যু হয় ১ হাজারের বেশি।

দাবানলে পুড়েছে স্পেনের মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ধরিত্রী পর্যবেক্ষণ কর্মসূচির আওতাধীন দ্য কোপার্নিকাস মনিটরিং সার্ভিস জানিয়েছে, স্পেনে চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে দাবানলসৃষ্ট কার্বন নিঃসরণ ২০০৩ সালের পর সর্বোচ্চ।

গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের কাছে পার্বত্য পেনতেলি অঞ্চলে বাতাসে ধেয়ে আসা দাবানলে বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে কমপক্ষে চারটি এলাকা এবং একটি হাসপাতাল খালি করতে হয়।

ইতালির আবহাওয়া দপ্তরগুলো জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধ থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তাপমাত্রা বেড়ে ৪০-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে।

দেশটিতে এরই মধ্যে বেশ কিছু দাবানলের খবর পাওয়া গেছে। তুসকানি এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় লাগা আগুন মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জ্বলছিল।