শিরোনাম :

লোডশেডিং এর ঘোষনায় অস্থির পুঁজিবাজার

লোডশেডিং এর ঘোষনায় অস্থির পুঁজিবাজার
Admin

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, যা আজ থেকে কার্যকর করা হচ্ছে। এই ঘোষণার পর দুই দিনই বড় পতন হলো পুঁজিবাজারে। দুই দিন মিলিয়ে সূচক কমেছে ১৫০ পয়েন্ট। এ ছাড়া লেনদেন চলতি বছরের তো বটেই, গত প্রায় এক বছরেরও সর্বনিম্ন।

পুঁজিবাজারের এমন পতনের কারণ বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক। বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও ব্যয় কমানোর জন্য সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের চিন্তিত করে তুলেছে। দেশের অর্থনীতি কোন দিকে যাচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কায় শেয়ার বিক্রি করছেন তারা।

বিনিয়োগকারীরা যতটা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার সেল করছে ততটা আতঙ্কিত হওয়ার বিষয় আছে কি?

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতিতে কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগিয়ে চলছে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক শাকিল রিজভী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভয়ের কারণে পুঁজিবাজারে যে পতন হচ্ছে ততটা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু আমাদের স্পেকিউলেটিভ মার্কেট, যার কারণে যে কোনো কিছু হলে শেয়ার মার্কেটের ওপরে দিয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘বাজারে বিনিয়োগকারীরা আসলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। কিছুদিন পরে আবার অনেকেই চলে আসবে তখন সব ঠিক হয়ে গেছে। তখন মনে হবে রিজার্ভ-টিজার্ভ সব ঠিক হয়ে গেছে।’

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘করোনার মধ্যে দেশে কোনো ইমপোর্ট হয়নি। দেশের বাইরে কেউ যায়নি। কলকাতায় প্রতিদিন ঝাঁকে ঝাঁকে লোক যায়, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক যায়। করোনার মধ্যে কোনো জায়গাতেই যায়নি। ট্যুর-ট্রাভেলস সব বন্ধ ছিল। রেমিট্যান্স ও এক্সপোর্টের মাধ্যমে ডলার যা এসেছে সব রিজার্ভে জমেছে।

‘এখন ইমপোর্ট হচ্ছে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ। রিজার্ভ তো কমবেই। ১০ বছর আগেও দেশের রিজার্ভ ছিল ৮ থেকে ৯ বিলিয়ন। এখন সেটা ৩৯-এর ঘরে।’

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বলেন, ‘পতনের কারণ হলো আতঙ্ক। এখান পৃথিবীর সব দেশ কিছু না কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বাঁচার জন্য। আমাদের সরকারও কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যে, কিছু নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

‘যেহেতু সরকার এগুলো ঘোষণা করছে যে, বিদ্যুৎ বন্ধ, তেলের পাম্প একদিন বন্ধ- এতে জনমনে একটা প্যানিকের সৃষ্টি হয়েছে যে, আমাদের অর্থনীতির অবস্থা কি এতই নাজুক হয়ে গেছে? সবাই তো আর বোঝে না অর্থনীতি সম্পর্কে।

‘আমাদের রিজার্ভ ৪৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩৯ দশমিক ৭৯ ডলারে নেমেছে। ফরেন রেমিট্যান্স কমেছে। পৃথিবীর সকল দেশেই কমেছে। সুতরাং ওইটার একটা বাতাস আমাদের পুঁজিবাজারেও লেগেছে। বড় বিনিয়োগকারীরা আপাতত সাইডলাইনে অবজারভেশনে আছে।

‘তার মানে এই নয়, উনারা সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে সাইড লাইনে আছে। উনাদের বিনিয়োগ আছে। সময়মতো উনারা অ্যাক্টিভিটি শুরু করবে। এজন্য ভলিউম কমে গেছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘আতঙ্ক তৈরি হয়েছে কারণ দেশের অর্থনীতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে শঙ্কার কারণে। আমাদের অর্থনীতি হয়তো ভালো দিকে যাবে না, এমনটা ভাবছেন অনেকেই। যে কারণে বাজারে প্যানিক সেল আছে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির অবস্থা ভালো, খারাপ দুইটাই আছে। তবে পুঁজিবাজার পতনের কারণ হলো সাপোর্ট না থাকা। আইসিবি যদি এখন ১০০ কোটি টাকাও সাপোর্ট দিতো তাহলেও বাজার ঘুরে দাঁড়াত। কিন্তু সবাই হাত গুটিয়ে বসে আছে।