দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কর্মবিরতির পর প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অবশেষে কাজে ফিরেছেন সিলেট ও মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকরা।
এ দুই জেলার বাগানগুলোর শ্রমিকরা রোববার সকাল থেকেই কাজে যোগ দেন। বাগানে বাগানে পাতা উত্তোলন শুরু করেন তারা। এতে দীর্ঘদিন পর প্রাণ ফিরেছে চা বাগানগুলোতে।
এদিকে রোববার সিলেটের বেশিরভাগ চা বাগানেই সাপ্তাহিক ছুটি। কেবল ৯টি বাগান চালু থাকে রোববার। এসব বাগানের শ্রমিকরা সকালে মালনীছড়া বাগানে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে তারা কাজে ফিরেন।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ফিনলে চা বাগানের শ্রমিক রতন মুণ্ডা বলেন, ‘অনেক দিন পর কাজে ফিরতে পেরে বেশ ভালো লাগছে, তবে মজুরি আরেকটু বাড়লে ভালো হতো। ১৭০ টাকা দিয়ে এখন চলা কঠিন।’
ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিক জরার্ধন ভৌমিক বলেন, ‘আমরা গত ১৯ দিন ধরে ন্যায্য মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। প্রধানমন্ত্রী নিজে আমাদের মজুরি বৃদ্ধি করে দেয়ায় আমরা অত্যন্ত খুশি।’
আরেক নারী চা শ্রমিক রেশমি গোয়ালা বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের মা। আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল একমাত্র তিনি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আজ (রোববার) থেকেই কাজে ফিরলাম।’
কাজে ফেরার বিষয়ে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানের শ্রমিক সুদীপ বাড়ৈ বলেছিলেন, ‘আমরা এখন কাজে যোগ দিইনি। এখন বৈঠক করছি। এরপর সিদ্ধান্ত জানাব।’
গণভবনে শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা বাগান মালিকপক্ষের বৈঠক হয়। এতে শ্রমিকদের মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই সময় প্রধানমন্ত্রী চা শ্রমিকদের রোববার থেকে কাজে ফেরার আহ্বান জানান।
৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে চারদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও ১৩ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করে আসছিলেন চা শ্রমিকরা।
এমন বাস্তবতায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও তা মেনে নেননি সাধারণ চা শ্রমিকেরা। আন্দোলন সফল করতে সড়ক, মহাসড়ক, রেলপথ অবরোধ করতে দেখা যায় তাদের।