শিরোনাম :

কঠিন সময়ে দেশ, বিশ্বে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা: প্রধানমন্ত্রী

কঠিন সময়ে দেশ, বিশ্বে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা: প্রধানমন্ত্রী
Admin

করোনা মহামারির অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তা ঘিরে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দায় ‘বাংলাদেশকেও কঠিন সময় অতিক্রম করতে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ এবং দুর্ভিক্ষ হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সরকারপ্রধান। সে জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যক্তিজীবনের সব ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী, মিতব্যয়ী ও সঞ্চয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

ঢাকার শাহবাগে বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার জের ধরে পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘যার ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম না। বাংলাদেশকেও কঠিন সময় অতিক্রম করতে হচ্ছে। যেখানে উন্নত দেশগুলো নিজেদের দেশ নিয়েই হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমাদের মতো দেশ, ঘনবসতিপূর্ণ দেশ, ভৌগোলিক সীমারেখায় যেটা ছোট, কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে বিশাল, সেখানে এই স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে তাদের সার্বিক সেবা দেয়া যে কত কঠিন দায়িত্ব, সেটা আমি উপলব্ধি করতে পারি।’

বিশ্বের প্রতিটি দেশে নিত্যপ্রয়োজনীর সামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে বলা হচ্ছে। খাদ্য কেনার ক্ষেত্রে রেশন করে দেয়া হচ্ছে। উন্নত দেশগুলো, আপনি আমেরিকা বলেন, ইংল্যান্ড বলেন, ইউরোপ বলেন, সেসব দেশে কিন্তু এই অবস্থা চলমান।’

এমন বাস্তবতায় মিতব্যয়, সঞ্চয় ও খাদ্য উৎপাদনের সমাধান দেখছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদেরও আরও মিতব্যয়ী হতে হবে। আমাদেরও নিজেদের দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে। কারণ এই যে ধাক্কাটা এলো, একটা তো করোনা, তারপর যুদ্ধ—এর ফলে সামনে কিন্তু আরও বেশি কঠিন সময় আসবে।

‘আপনারা যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময় চিন্তা করেন, তখন দুর্ভিক্ষ হয়েছিল বিশ্বব্যাপী। এখনও কিন্তু সে রকম একটা সম্ভাবনা (আশঙ্কা) রয়েছে। সে জন্য আমাদের দেশের সব মানুষকে আমি এটাই আহ্বান করি, যার যেখানে এক ইঞ্চি জমি আছে, যে যা পারেন উৎপাদন করেন। যে যা পারেন ফসল ফলান। যে যা পারেন কিছু করেন। নিজেরা কিছু করে নিজের চাহিদা নিজে পূরণে উদ্যোগী হন।

খাদ্য নিরাপত্তা না থাকলে হাজার চিকিৎসা দিয়েও রোগী বাঁচানো সম্ভব নয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কারণ খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসেবা—কাছাকাছি। একটার ওপর আরেকটা নির্ভরশীল। সে জন্য আমি সবাইকে এটা বলব যে জ্বালানি ব্যবহারে, বিদ্যুৎ ব্যবহারে, পানি ব্যবহারে সর্বক্ষেত্রে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে।

‘মিতব্যয়ী হতে হবে। আর নিজেরা কিছু সাশ্রয় করতে হবে। নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। যেন যেকোনো দুঃসময় এলে আমরা তা মোকাবিলা করতে পারি। শহর-গ্রাম সর্বস্তরের মানুষকে আমি সেই আহ্বানটা জানাই।’