বিএনপি সংসদ থেকে পদত্যাগের পর বগুড়ার যে দুটি আসন শূন্য হয়েছে, তার কোনোটিতে গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগে প্রার্থী দেখা যায়নি। এর মধ্যে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনটি উন্মুক্ত রাখার পর লড়াই হয় জাসদ ও জাতীয় পার্টিতে। আর বগুড়া-৬ আসনটি দুইবারই ছেড়ে দেয়া হয় জাতীয় পার্টিকে।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারির উপনির্বাচনে আবারও এই দল দুটির নেতারা ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে ছাড়ের প্রত্যাশ্যায় আছেন। যদিও আওয়ামী লীগের নেতারাও ভোটে দাঁড়াতে আগ্রহী।
দুটি আসনেই বিএনপির ঘাঁটি বলে পরিচিত। নবম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিপর্যয়েও হয়নি হাতছাড়া। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে নেমে বিএনপির সংসদ থেকে পদত্যাগে ফাঁকা হয়েছে এবার। তাদের পদত্যাগে ঘোষণা হয়েছে তফসিল।
বিএনপি ও জামায়াত এবং সমমনারা আসছেন না উপনির্বাচনে। সিপিবির নেতৃত্বে বাম জোটও জানিয়েছে, ভোটে নেই তারাও। চরমোনাইয়ের পীরের ইসলামী আন্দোলনেরও একই সিদ্ধান্ত।
আওয়ামী লীগ, গত নির্বাচনে মহাজোটের শরিক, বর্তমান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিই আর জাসদ আছে আলেচনায়।
কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা নিয়ে বগুড়া-৪ আসনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেনকে।
এর মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচনে তার লড়াই হয় জাতীয় পার্টির নুরুল আমিন বাচ্চুর সঙ্গে। বিএনপি-জামায়াত জোট ও সমমনাদের বর্জনের মধ্যে এই আসনটিতে প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে তানসেনকে হারিয়েই এমপি হন বিএনপির মোশারফ হোসেন।
জাসদ নেতা আশা করছেন, উপনির্বাচনেও তিনিই পাবেন আওয়ামী লীগের সমর্থন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ১৪ দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এমপি হয়েছিলাম। তাই এবারও আমি আশাবাদী। উপনির্বাচনে আমাকে মনোনীত করবেন নেত্রী।’
তবে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলালউদ্দিন কবিরাজও আগ্রহী।
কাহালু পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলালউদ্দিন কবিরাজ আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নিচ্ছেন ভোটের প্রস্তুতি। হঠাৎ করে আসন শূন্য হওয়ায় নেমেছেন মাঠে। ২০০৮ সালেও তুলেছিলেন ফরম। কিন্তু পাননি মনোনয়ন।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন মোস্তফা কামাল ফারুক, একই দলের নেতা আব্দুস সালাম বাবুও আগ্রহী ভোটে।
বগুড়া-৬ এ ২০১৯ সালের জানুয়ারির উপনির্বাচনে জয় পাওয়া জি এম সিরাজ হারান আওয়ামী লীগ নেতা টি জামান নিকেতাকে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারির ভোটে লড়তেও আগ্রহী তিনি। নিকেতা বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপুর নামও রয়েছে আলোচনায়।
ছাত্র রাজনীতি থেকে বগুড়া আওয়ামী লীগের সম্পাদকের পদে থাকা রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, ‘বগুড়া-৬ আসনে অনেক দক্ষ ও যোগ্য আওয়ামী লীগ নেতা রয়েছেন। সবাই এমপি হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন। আমি ছাড়াও অন্তত ১৭ জন উপনির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দলের নেত্রী যাকে পছন্দ করবেন, আমরা তার জন্য কাজ করব।’
গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাওয়া জাপা নেতা নূরুল ইসলাম ওমরও ভোটে আগ্রহী।