বাংলাদেশের মানুষের আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হলো। পদ্মা সেতুর পর উদ্বোধন হলো বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বেলা ১১টা ৪ মিনিটে উত্তরার দিয়াবাড়ী প্রান্তে মেট্রোরেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।
এর মধ্য দিয়ে মেট্রো যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ; রাজধানীতে উন্মোচন হলো যোগাযোগব্যবস্থার নতুন অধ্যায়।
নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারপ্রধানের ছোট বোন শেখ রেহানা, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা
উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বুধবার উদ্বোধন হয় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
উত্তরা-মিরপুর এলাকার সর্পিল রেলপথ, সুদৃশ্য স্টেশন এবং ঝকঝকে রাস্তা তাক লাগিয়ে দিচ্ছে চোখে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন দুর্বিষহ দিন পেছনে ফেলে উচ্ছ্বসিত মানুষ। ইতিহাসের অংশীদার হতে প্রতীক্ষায় ছিলেন সবাই।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রভাব সুদূরপ্রসারী ও বহুমুখী।
অর্থনীতির গবেষক বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, মেট্রোরেল ঢাকায় তীব্র যানজট সমস্যার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
তার ভাষ্য, ‘ঢাকায় মেট্রোরেল চালু করার আত্মতৃপ্তি নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। ঢাকার মতো চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহরেও এই সেবা চালু করতে হবে। তাহলেই ঢাকার ওপর মানুষের চাপ কমবে; রাজধানীর বাইরেও ঢাকার মতো অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।’
দেশের অবকাঠামো খাত নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষক জায়েদ বখত।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেট্রোরেল এককভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখবে, সে বিষয়ে কোনো গবেষণা এখনও কেউ করেনি। অনেকেই বলছেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল দেশের জিডিপিতে ২ শতাংশ যোগ করবে, তবে আমার বিবেচনায় মেট্রোরেলের বিষয়টি পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলের চেয়ে আলাদা।
‘মেট্রোরেল রাজধানীর দুই-আড়াই কোটি মানুষের সময় সাশ্রয় করবে। মানুষ দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারবে। বেশি বেশি কাজ করতে পারবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বেড়ে যাবে। মোট কথা, অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে মেট্রোরেল।’