শিরোনাম :

রাজশাহী ও সিলেট সিটিতে ভোটের লড়াই শুরু

রাজশাহী ও সিলেট সিটিতে ভোটের লড়াই শুরু
Admin

সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সিলেট

এবারের নির্বাচনে সিলেট সিটির ১৯০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে, যার মধ্যে ১৩২টি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। সে হিসাবে সিলেটের অর্ধেকের একটু বেশি, অর্থাৎ ৬৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।

সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয় ভাবাচ্ছে নির্বাচন-সংশ্লিষ্টদের।

সারা দেশের মতো সিলেটেও শুরু হয়েছে বৃষ্টি, কিন্তু দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে সিলেটের পার্থক্য হচ্ছে পাহাড়বেষ্টিত হওয়ায় এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। রয়েছে পাহাড়ি ঢলের সম্ভাবনাও। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই অনেক ভোটকেন্দ্র এখন পানির নিচে রয়েছে। ফলে বৃষ্টি হলে ভোটাররা ভোট দিতে বের হবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।

সিলেট সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ভোটে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। বৃষ্টির মধ্যে ভোটার কেমন আসবেন, এখনই বলা যাচ্ছে না। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভোটাররা আসবেন।’

আগের কয়েক দিনের তুলনায় মঙ্গলবার সিলেটে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার দিনভর মুষলধারে বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, সিলেটের ১৯০ কেন্দ্রে প্রায় ১ হাজার ৭০০ সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার ও আর্মড পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।

বিভিন্ন কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থায় কোনো ত্রুটি নেই বলে জানিয়েছেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান।

তিনি জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকেই সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে জেলা প্রশাসনের ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৪২টি দল কাজ করছে। এর বাইরেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আরও ১০টি দল রয়েছে। তাদের মধ্যে ওয়ার্ড ভাগ করে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি দলের সঙ্গে এক প্লাটুন বিজিবি রয়েছে। ভোটের পরের দিন পর্যন্ত এই দলগুলো মাঠে থাকবে।

সিলেট মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, ভোটের মাঠের নিরাপত্তায় রয়েছেন আড়াই হাজার পুলিশ সদস্য। পুলিশের ৫২টি মোবাইল টিম, ১৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, ছয়টি রিজার্ভ ফোর্স এবং প্রত্যেক জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আছেন। ভোটের পরের দিন পর্যন্ত এই দলগুলো মাঠে থাকবে।

সিলেট সিটি নির্বাচনে ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন। ট্রান্সজেন্ডার ভোটার রয়েছেন ছয়জন।

এবারই প্রথম ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছে এ সিটিতে। নগরের নতুন ১৫টি ওয়ার্ডেও এবার প্রথম নির্বাচন। নতুন ওয়ার্ডগুলো মিলিয়ে এবার ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। গত বছরের তুলনায় এবার ভোটার বেড়েছে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আটজন। নগরের ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রাজশাহী

রাজশাহী সিটিতে ১৫৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হচ্ছে, যার মধ্যে ১৪৮টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ এ সিটির ৯৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ এবং ঝুঁকিমুক্ত কেন্দ্রগুলোকে ‘সাধারণ’ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ। সে অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেয়া হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, ‘১৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৪৮টি গুরুত্বপূর্ণই, আর বাকি ৭টি সাধারণ কেন্দ্র। তাই আমরা সব কেন্দ্রগুলোকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নিয়েছি।’

নির্বাচনে যেকোনো বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি কেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকেই পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র‌্যাব, আনসার ও আর্মড পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সিটিতে সাড়ে তিন হাজার পুলিশ ও ৩০০ র‌্যাব সদস্য ছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে ১০ প্লাটুন বিজিবি। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় রয়েছেন আরও ১০ ম্যাজিস্ট্রেট। নির্বাচন কমিশনের ১০ জন নিজস্ব পর্যবেক্ষকও মাঠে রয়েছেন।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য যা যা করণীয়, সবকিছু করা হয়েছে।

শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের সব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ কর্মকর্তা।

রাজশাহীতে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২। এর মধ্যে নতুন ভোটার ৩০ হাজার ১৫৭। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন। ট্রান্সজেন্ডার ভোটার রয়েছেন ৬ জন।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে চার মেয়র, ১১২ সাধারণ কাউন্সিলর ও ৪৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।