শিরোনাম :

যশোরে বর্ণঢ্য পুলিশ সমাবেশ অনুষ্ঠিত

যশোরে বর্ণঢ্য পুলিশ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
Admin

দৃষ্টিনন্দন প্লাকার্ড ফেস্টুন ব্যানারে মোড়া গোটা পুলিশ লাইনস। সকাল থেকেই গোটা শহরে উৎসবের আমেজ। দুপুর আড়াইটা থেকে আমন্ত্রিত অতিথিদের নানা সাজে আগমন। আর বিকেল ৩ টায় মনমুগ্ধকর পরিবেশ। জমকালো হৃদয়গ্রাহী ডিসপ্লে। সর্বোপরি সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃষ্ফূর্ত অংশ গ্রহণ। মনে রাখার মত ক্ষণ ২২ মার্চ বিকেল ৩ টা থেকে সন্ধা ৬ টা। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হল যশোর জেলা পুলিশ আয়োজিত বার্ষিক পুলিশ সমাবেশ ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান।  
৮টি ইভেন্টের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, জেলা পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন  দলের প্যারেড ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মনমুগ্ধকর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা ভিত্তিক ডিসপ্লের এই অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ডক্টর বেনজীর আহমেদ বিপিএম বার। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি পুনাকের সভানেত্রী জীশান মির্জা ও খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ডক্টর খন্দকার মহিদ উদ্দিন বিপিএম বার।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বের পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডক্টর বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ বীরের দেশ। দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সব বাধা মাড়িয়ে গত ১৪ বছরে বিস্ময়কর উন্নয়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে দেশ। সামাজিক অর্থনৈতিক রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এসবে ঈর্ষান্বিত হয়ে চিহ্নিত অনেক চক্র দেশের মধ্যে ষড়যন্ত্র করছে, ব্যর্থ হয়ে বাইরে থেকেও ষড়যন্ত্র করছে। রাষ্ট্রের ভেতর থেকে বা বাইরে থেকে যারা দেশদ্রোহীতা করছে তাদেরকে রুখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ ক্রীড়ায় বিশাল অবদান রেখে যাচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ পুলিশ ভাল করছে। খেলাধুলা পুলিশের পেশার সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই সুযোগ পেলেই এ ধরণের খেলাধুলার আয়োজন করা ভাল। এতে করে মানসিকতা, ফিটনেস, ডিসপ্লে সবই দৃঢ় করে।
যশোর পুলিশের এই আয়োজনকে তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইভাবে যশোরবাসীর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পুলিশ লাইনস মাঠের সব ডিসপ্লে জাতীয় মানের হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যশোরের পুলিশ সুপার ও বার্ষিক পুলিশ সমাবেশের সভাপতি প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিপিএম বার পিপিএম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির সভানেত্রী  জিসান মির্জা ও  খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি ডক্টর খন্দকার মহিদ উদ্দিন।   
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর ক্রীড়া প্যারেড অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক সার্কেল মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন অনুমতি প্রার্থণা করেন। এরপর প্যারেড দলগুলো একেএকে প্রধান অতিথিকে অভিবাদন প্রদান করেন এবং অভিবাদন মঞ্চ অতিক্রম করেন। এরপর শুরু হয় মনমুগ্ধকর ডিসপ্লে, বাঙালি, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা ভিত্তিক গান কথা মালার সাথে নাচ। এই নান্দনিক ডিসপ্লেতে যুক্ত হয় বিদ্রোহী কবি নজরুলের গণ সঙ্গীত ও জনপ্রিয় কয়েকটি দেশের গান। যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের এই পরিবেশনা, নান্দনিক ডিসপ্লে ও জেলা পুলিশের ডিসপ্লে¬ এবং কুচকাওয়াজ মনমুগ্ধকর পরিবেশের অবতারণা হয় পুলিশ লাইনস মাঠে। আধা ঘন্টা মন্ত্রমুগ্ধের মত কেটে যায় কয়েক হাজার আমন্ত্রিত অতিথির। এরপর শুরু হয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। পুলিশ সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ৮ টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। ইন্সপেক্টর থেকে তদন্ত কর্মকর্তাদের ১শ’ মিটার দৌঁড়, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মেয়রদের ১শ’ মিটার দৌঁড়। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের ১শ’ মিটার দৌঁড়, মুক্তিযোদ্ধাদের ১শ’ মিটার হাঁটা, নারী অতিথিদের বালিশ বদল খেলা, ১০ বছরের শিশুদের বিস্কুট খাওয়া দৌঁড়, পুলিশের সদস্যদের কলা গাছে ওঠা, যেমন খুশি তেমন সাজো এবং পুলিশের এলার্ম প্রস্তুতির উপর একটি বিশেষ পর্ব। ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোও মন কাড়ে। সব শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাগন, মিডিয়া কর্মীসহ যশোর শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দায়িত্বশীলরা উপস্থিত ছিলেন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।