শিরোনাম :

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি নিয়ে বৈষম্য

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি নিয়ে বৈষম্য
Admin

প্রচণ্ড গরম আর রোজার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। রোজায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ সপ্তাহে দু’দিন বন্ধ। এর বাইরে প্রতিদিন ক্লাসের সময়ও কম। মাধ্যমিকে চারটি থেকে পাঁচটি ক্লাস হচ্ছে। এক শিফটের স্কুল চলছে সাড়ে আটটা থেকে ১১ টা ১৫ পর্যন্ত। আর দু’শিফটের স্কুল ছুটি হচ্ছে ১ টা ১৫ মিনিটে। অপরদিকে, প্রাথমিকে কেবলমাত্র শুক্রবার বন্ধ। অর্থাৎ সপ্তাহে একদিন ছুটি। ক্লাস চলছে দীর্ঘ সময় ধরে। প্রতিদিন ছুটি হচ্ছে তিনটের সময়। এটি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা চলছে। দীর্ঘ সময় কোমলমতি শিশুদের গরমের মধ্যে আটকে রাখতে পারছেন না শিক্ষকরা।
যশোরের এক হাজার দুশ’৮৯ টি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী রয়েছে দু’ লাখ সাত হাজার ৪১ জন। এদের সবাই শিশু। বিপুল সংখ্যক শিশুকে গরমের মধ্যে স্কুলে যেতে হচ্ছে। প্রাথমিকের চতুর্থ-পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া অনেক শিশু রোজা থাকে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে স্কুলে দীর্ঘ সময় থাকা তাদের জন্য কষ্টকর বলে অভিভাবকরা বলছেন।  
শিক্ষকরা বলছেন, শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ১১ টা ৪০ পর্যন্ত প্রথম শিফটের ক্লাস হচ্ছে। প্রথম শিফটে শিশু, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি রয়েছে। এরপর বেলা ১২ টা থেকে তিনটে পর্যন্ত চলছে দ্বিতীয় শিফটের ক্লাস। দ্বিতীয় শিফটে ক্লাস হচ্ছে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির। এরমধ্যে দুপুর একটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত নামাজের বিরতি থাকছে।
অভিভাবকরা বলছেন, বর্তমানে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই সমস্যা বেশি। ফলে, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুৎহীন স্কুলে ব্যাপক কষ্টের শিকার হচ্ছে শিশুরা। অভিভাবকরা প্রাথমিকে ছুটি বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে যেখানে সপ্তাহে দু’দিন ছুটি, একইসাথে ক্লাসটাইমও কম; সেখানে প্রাথমিকে ছুটি দু’দিন না থাকা এবং ক্লাসটাইম বেশি হওয়া রীতিমতো বৈষম্য।
শিক্ষকরাও একই কথা বলছেন। শিক্ষকদের বক্তব্য, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেখানে আগে আগে চলে যাচ্ছেন, সেখানে প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দোষ কী। তাদের কেন প্রচণ্ড গরম আর রোজার মধ্যে দীর্ঘ সময় আটকে রাখা হচ্ছে।
প্রাথমিকের কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, তাদের স্কুল হাইস্কুল ক্যাম্পাসের সাথে। যখন হাইস্কুলের ছেলে-মেয়েরা আগে আগে চলে যাচ্ছে তখন প্রাথমিকের শিশুদের আটকে রাখা কঠিন হচ্ছে। এই অবস্থার অবসান দাবি করেছেন এসব প্রধান শিক্ষক।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (টিইও) ইসমাইল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ সরকারি সিদ্ধান্ত। আমাদের কাছে নির্দেশনা যেভাবে আসবে আমরা সেইভাবে কাজ করবো।
এ বিষয়ে যশোর জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এটি সরকারি সিদ্ধান্ত। যেভাবে সিদ্ধান্ত এসেছে আমরা সেইভাবে কাজ করছি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ ওয়াহিদুল আলম বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা বড়। তাদের পক্ষে অনলাইনে ক্লাস করা সম্ভব। কিন্তু প্রাথমিকের শিশুদের পক্ষে অনলাইনে ক্লাস করা অসম্ভব। এসব কারণে সরকার প্রাথমিকের ক্ষেত্রে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।