শিরোনাম :

আর ‘ফেরানো যাবে না’ কাওসার আহমেদ চৌধুরীকে

আর ‘ফেরানো যাবে না’ কাওসার আহমেদ চৌধুরীকে
Admin

আমায় ডেকো না/ ফেরানো যাবে না/ ফেরারি পাখিরা/ কূলায় ফেরে না’— কয়েক দশকের জনপ্রিয় এই গানের রচয়িতা কাওসার আহমেদ চৌধুরী নিজেই আজ না ফেরার দেশের বাসিন্দা। কোনো ডাকেই আর তাকেফেরানো যাবে না রাজধানীর গ্রিন রোডের ধানমন্ডি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এই ক্লিনিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান কাওসার আহমেদ চৌধুরী। তার পরিবারের ঘনিষ্ঠজন এরশাদুল হক টিংকু তথ্য সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

এরশাদুল হক টিংকু বলেন, ‘কিডনির জটিলতা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই চিকিৎসাধীন ছিলেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী। এর মধ্যে তিনি কোভিড পজিটিভ আসেন। রাত ১০টার দিকে তিনি গ্রিন রোডের ধানমন্ডি ক্লিনিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।দাফন বিষয়ে আগামীকাল বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ধানমন্ডি ক্লিনিকের আইসিইউয়ের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. গোলাম মর্তুজা সারাবাংলাকে বলেন, কোভিড পজিটিভ ছিলেন তিনি। মাল্টিপল কো-মরবিডিটি ছিল তার। রাত ১০টা মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত কাওসার আহমেদ চৌধুরী অসুস্থ ছিলেন। এর মধ্যে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসা শেষে তাকে ধানমন্ডির ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন তিনি।

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় গীতিকবিদের একজন কাওসার আহমেদ চৌধুরী। নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর গাওয়াআজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে’, কুমার বিশ্বজিতেরযেখানে সীমান্ত তোমার’, আইয়ুব বাচ্চুরএই রুপালি গিটার ফেলে’, লাকি আখন্দেরআমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না, সামিনা চৌধুরীরকবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ফিডব্যাকের মাকসুদের কণ্ঠেমৌসুমি কারে ভালোবাসো তুমি’— দশকের পর দশক ধরে এমন অসামান্য জনপ্রিয় সব গানের রচয়িতা তিনি।

কোনো নিয়মের মধ্যে আটকে না থাকা কাওসার আহমেদ চৌধুরীর পরিচয় গীতিকবি এবং জ্যোতির্বিদ হিসেবেই সীমাবদ্ধ নয়। তিনি একাধারে কবি, লেখক, চিত্রশিল্পী। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধেও রেখেছেন ভূমিকা।

বাউন্ডুলে কাওসার আহমেদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হয়ে স্বপ্ন দেখেছেন চিত্রশিল্পী হওয়ার। অনেকগুলো বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন। কবিতা আর জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহ আরও পুরনো। চিত্রনির্মাতাও হতে চেয়েছিলেন। তবে কবিতা লিখছেন ছোটবেলা থেকেই। কলকাতার দেশ পত্রিকাতেও তার কবিতা ছাপা হয়েছে।

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে প্রয়াত লাকী