শিরোনাম :

মরক্কোর ধ্বংসস্তূপে প্রাণের আশা ফুরাচ্ছে

মরক্কোর ধ্বংসস্তূপে প্রাণের আশা ফুরাচ্ছে
Admin

সময় যত গড়াচ্ছে, ধ্বংসস্তূপে প্রাণের আশা ফুরিয়ে আসছে। তবু উদ্ধারকারীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কাউকে জীবিত উদ্ধার করা যায় কি না। মরক্কোয় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে এখন শুধুই স্তব্ধতা। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে।

দেশীয় উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন যুক্তরাজ্য, স্পেন ও কাতারের কর্মীরা। তারাও প্রাণের আশায় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মঙ্গলবার আল জাজিরার প্রতিবেদেন বলা হয়েছে।

৮ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে মরক্কোর পর্যটন শহর মারাকেশ থেকে ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পটির তাণ্ডবে অ্যাটলাস মাউন্টেন অঞ্চলের কিছু পাহাড়ি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮৬২। আর আহতের সংখ্যা এখন ২৫৬২ জনের দাঁড়িয়েছে। উদ্ধারকারীরা বলছেন, ঐতিহ্যবাহী মাটির-ইটের ঘরগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় জীবিত মানুষকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে এসেছে।

স্প্যানিশ উদ্ধারকারী আন্তোনিও নোগালেসের হাতে থাকা ইমি এনটালার প্রত্যন্ত গ্রামের একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের খাড়া ঢালে একজন পুরুষ এবং একটি কুকুর ঘোরাফেরা করছে। আর কেউ নেই এ অঞ্চলে।

তিনি বলেন, ‘ধ্বংসের মাত্রা…। যা দেখছি তা বর্ণনা করার জন্য সঠিক শব্দ খুঁজে পেতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। একটি ঘরও দাঁড়িয়ে নেই।’

এমন ভয়াবহতায়ও উদ্ধারকারীরা কুকুর নিয়ে ওইসব এলাকায় প্রাণের আশায় তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান আন্তোনিও।

তিনি বলেন, ‘আমি নিশ্চিত আগামী দিনেও হয়তো কাউকে উদ্ধার করা যাবে। আমরা মনে করি, ধসে পড়া কাঠামোতে এখনও মানুষ থাকতে পারে, সেখানে হয়তো বাতাস ঢোকার ব্যবস্থাও থাকতে পারে। আমরা কখনই আশা ছাড়ি না।’

রয়টার্স জানিয়েছে, টিনমেল নামের একটি গ্রামে প্রায় প্রতিটি ঘর ধূলিসাৎ হয়ে গেছে এবং পুরো সম্প্রদায় গৃহহীন হয়ে পড়েছে। গ্রামের বিভিন্ন অংশে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা কয়েক ডজন পশুর মৃত্যুর দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে চারদিকে।

৫৯ বছর বছরী মোহাম্মদ এহসান জানান, তারা রাতের খাবার খাওয়ার সময় ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ সময় তাদের ছেলে বাইরে ছিলেন। প্রতিবেশীর একটি ঘর বিধ্বস্ত হলে সেটির নিচে আটকে পড়েন তার ছেলে।

তিনি বলেন, ‘একটা সময় পর্যন্ত ছেলেটা কাঁদছিল। তবে আমরা যখন তার কাছে পৌঁছালাম তখন সে কান্না থামিয়ে দিয়েছে। সে মারা গেছে।’

টিনমেল ও আশপাশের গ্রামের অনেকে জানিয়েছেন, তারা হাত দিয়ে টেনে ধ্বংসস্তুপ থেকে উপড়ে তুলেছেন বেশ কিছু মানুষকে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছ, ভূমিকম্পের পর মরক্কোয় হাজার হাজার মানুষ এখনও গৃহহীন। কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারার কারণে এগোচ্ছে না উদ্ধারকাজ।

ভুক্তভোগীরা আশ্রয় নিয়েছেন তাঁবুর নিচে। খাবারসহ নানা সংকটের কথা উল্লেখ করে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন।