কাতার বিশ্বকাপের শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে টাইব্রেকে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা খরা ঘুচাল আর্জেন্টিনা।
নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতায় থাকার পর অতিরিক্ত সময়েও গোল ৩-৩ সমান থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকে। সেখানে ৪-২ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে নিজের শেষ বিশ্বকাপটা শিরোপা দিয়ে রাঙান লিওনেল মেসি।
৩ যুগের শিরোপা খরা কাটানোর মিশনে রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। সেই মিশনে প্রথমার্ধে এক ধাপ এগিয়ে গেল লিওনেল মেসিরা। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গিয়েছে লাতিন পরাশক্তিরা।
শিরোপা ধরে রাখার মিশনে মাঠে নেমে আর্জেন্টিনার ওপর ম্যাচের শুরু থেকেই চড়াও হন ফরাসি ফুটবলাররা। ফাউলের পসরা সাজিয়ে বসেন তারা ম্যাচের শুরু থেকে।
মারকুটে ফুটবল খেলেও মেসিদের থামাতে পারছিলেন না হার্নান্দেজ-কুন্দেরা। পুরো মাঠ নিজেদের দখলে রেখে ফ্রান্সের গোলমুখে আক্রমণ চালাতে থাকে মেসি-দি মারিয়ারা।
ম্যাচের ২২ মিনিটে ফ্রান্সের উসমান ডেম্বেলে নিজেদের বক্সে ফাউল করেন আনহেল দি মারিয়াকে। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দিলে স্পট থেকে দলকে লিড এনে দেন লিওনেল মেসি।
চলতি বিশ্বকাপে এটি মেসির ষষ্ঠ গোল। একই সঙ্গে তিনি এক ধাপ এগিয়ে যান গোল্ডেন বুট জয়ের দিকে।
গোল দিয়ে ফ্রান্সের ওপর আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় আর্জেন্টিনা। সেই সুবাদে ১৩ মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুণ হয় আলবেসেলেস্তিয়ানদের।
৩৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পান হুলিয়ান আলভারেসের পাস থেকে ডি বক্সের ভেতরে বল পান আনহেল দি মারিয়া। চমৎকার শটে ফ্রান্সের গোলকিপার উগো লরিসকে পরাস্ত করেন দি মারিয়া।
আর তাতেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
এরপর বিরতির আগ পর্যন্ত ফ্রান্স বেশ কিছু আক্রমণ চালালেও গোল বের করে আনতে পারেননি। আর তাতেই ২ গোলে পিছিয়ে থাকে বিরতিতে যেতে হয় তাদের।
দ্বিতীয়ার্ধের ২০ মিনিটেও ম্যাচে প্রাধান্য ধরে রেখেছে আর্জেন্টিনা। এক ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেলেও ফ্রান্স এখনও গোল শট নিতে পারেনি। আর্জেন্টিনার পেনাল্টি বক্সেও কোনো টাচ পায়নি ফরাসিরা।
কিন্তু ম্যাচের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছন্দ হারিয়ে ফেলা ফ্রান্স ফিরতে থাকে স্বরূপে।
ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট দশেক আগে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। সেখান থেকে গোল করে ফ্রান্সকে ম্যাচে ফেরান কিলিয়ান এমবাপে।
৩ মিনিট পর থুরামের পাস থেকে গোল করে সমতা ফেরান এমবাপে।
৯৪ মিনিটে কোলো মুয়ানির শট ঠেকিয়ে দলকে নিরাপদে রাখেন আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেস। অন্যপ্রান্তে লিওনেল মেসির শট ঠেকিয়ে দেন ফ্রান্সের অধিনায়ক উগো লরিস।
অতিরিক্ত সময়ের ১০৮ নম্বর মিনিটে মেসির গোলে খেলায় ফেরে আর্জেন্টিনা। মেসি গোল করে দলকে আরও একবার লিড এনে দেন।
আর্জেন্টিনার এগিয়ে যাওয়ার ১০ মিনিট পর পেনাল্টি থেকে নিজের হ্যাটট্রিক করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপে। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের জিওফ হার্স্টের পর এই প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক দেখল ফুটবল বিশ্ব।
এতে করে ৩-৩ গোলে সমতায় শেষ হয় ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ের খেলা। আর ফলাফল নির্ধারণের জন্য খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকে ফ্রান্সের হয়ে এমবাপে প্রথম শট জালের ঠিকানা খুঁজে নিলেও শট মিস করেন অরেলিয়ে চুয়ামেনি ও কিংসলে কোমান। আর্জেন্টিনার হয়ে টানা ৪টি শট থেকে স্কোর কেউ মিস করেননি।